কিছু সাধারণ প্রশ্ন এবং তার অসাধারণ উত্তর...

* সখি তুমি কেন জিমে যাও???!!! তোমার কি দায় পড়েছে (মেদ বেড়েছে)?
আমাদের দেশে কিছু সাধারণ ধারণা প্রচলিত। কেউ হেঁটে কোথাও গেলে ধারণা করা হয় ভাড়া বাঁচানোর জন্য হেঁটে যাচ্ছে। হেঁটে কোথাও যাচ্ছেন দেখলেই মানুষ আপনাকে থামায়ে জানতে চাইবে কি ব্যাপার হন্তদন্ত হয়ে কোথায় যান? তেমন কিছু হয় নাই এমনি হাঁটছেন বা বাসায় যাচ্ছেন শুনলে আকাশ থেকে বাতাস থেকে পড়বে। আরো দরদী হলে আপনাকে লিফ্ট দিতে চাইবে(রিকশা গাড়ি যেকোনো বাহন হতে পারে)। নিজে নেমে গিয়ে বলবেনা চলেন আমিও হাঁটি। দরকার পড়লে টাকা খরচ করে ট্রেডমিলে হাঁটবো তাই বলে রাস্তায়!!! চট্টগ্রামে ফ্লাইওভারের কাজের জন্য জি ই সি এর চার রাস্তার মোড় আট রাস্তার মোড় এ রূপান্তরিত হওয়ায় আমি হাঁটতাম। নিজের জান রাস্তা পার হওয়ার সময় চালকের হাতে না দিয়ে নিজের হাতে রাখাটাই যুক্তিযুক্ত মনে হত। আর বড় বড় গর্ত তো বসে আছেই আপনাকে কোলে তুলে নেয়ার জন্য। আইইউবিএটি তে চাকরির সময় আমার বাসা থেকে দিনে চারবার যাতায়াত করতে হতো। শেষের কয়েক মাস আমি ভার্সিটির খুব কাছে থাকতাম এবং দুপুরে বাসায় খেতে যেতাম। ৪ বারের মধ্যে আমি অন্তত ২ বার কোন কোন দিন ৩ বার বা ৪ বার ই চেষ্টা করতাম হাঁটার। আমার আলাদা হাঁটাহাঁটি করার সময় ছিল না বা আলসেমি ছিল তাই ওই সময়টা কাজে লাগাতাম। আবার সকালে অনেকে একসাথে বের হত বলে রিকশার অভাব থাকত। হয়তো আমিও ডাক দিলাম এক ছাত্র/ছাত্রী ও ডাক দিলো। ছাত্রছাত্রীরা বিশেষ ভদ্র ছিল। শিক্ষক হিসেবে চেহারা না চিনলেও আইডি কার্ডের সবুজ ফিতা দেখে শিক্ষকদের জন্য রিক্সা ছেড়ে দিতো। আমরা বলতাম ঠিক আছে তাহলে একসাথে চলে যাই, আর নয়তো সময় থাকলে বলতাম আমার তো এখন ক্লাস নাই তুমি যাও, আমি হাঁটবো।
জিমের ক্ষেত্রে প্রচলিত ধারণা হলো যারা নিজেদের মোটা মনে করে বা যাদের প্রয়োজনের বেশি টাকা আছে তারাই জিমে যায়। সাধারণত যারা ঘরে এক গ্লাস পানিও নিজে নিয়ে খায় না তারা জিমে যায়। কিন্তু এখানে দেখলাম শরীর চর্চা কে ওরা বেশ গুরুত্ব দেয়। যাদের গড়ন যত বেশি সুন্দর তারা ততো বেশি জিমে যায়। ব্যায়াম না করাটাই এখানে আনকমন। মেদ কমানো ছাড়াও ব্যায়ামের আরেকটা মূল উদ্দেশ্য আছে সেটা হলো মাসেল বাড়ানো যেটা আমরা ভুলে যাই। আমার কাছে মনে হয় আমি ফিট না, আমি অল্পতে ক্লান্ত হয়ে পরি। তাই ব্যায়াম করাটা জরুরি। এখন যদি আমি বলি ব্যায়াম করলে প্রথম প্রথম মাসেল ক্ষতিগ্রস্থ হবে, সবাই বলবে ও মোর মনু আমি কি টাকা দিয়া সময় নষ্ট কইরা ক্ষতিগ্রস্থ হইতে আইসি!!!! কিন্তু পরে মাসেল বিদ্রোহ করে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য ধীরে ধীরে নিজেকে শক্তিশালী করবে। তখন আসল উপকার পাওয়া যাবে (আমি মোটেও এই বিষয়ে জ্ঞানী নই। গুগল আন্টিকে জিজ্ঞেস করো)। অবজেকশন ইওর অনার, মাসেল শুধু দেখানোর বিষয় না এর আরো অনেক কাজ আছে দৈনন্দিন জীবনে। আমরা সব কাজ ই করি মাসেল ব্যবহার করে।

*এরপর আসি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে সখি তুমি শুধু শুধু কেন সিঁড়ি বাও??? সেকি কেবল ই যাতনাময়?
না, সে কেবল ই যাতনাময় না। এটা হলো শর্টকাট। আমি হিসেব করে দেখেছিলাম সিঁড়ি দিয়ে ক্লাসে যেতে কম সময় লাগে। লিফ্টে প্রত্যেক তলায় একঝাঁক মানুষ নামবে আবার একঝাঁক মানুষ উঠবে তাতে যে সময় লাগবে তার চেয়ে কম সময়ে সিঁড়ি বেয়ে উঠা যাবে। আর অলস মানুষ হিসেবে আমি শর্টকাট ই বেছে নিতাম। কত শেষ মুহূর্তে রুম থেকে বের হয়ে শেষ সঠিক সময়ে ক্লাসে ঢুকা যায়। পিউর ম্যাথ। এই ম্যাথ (বড় বড় কথা)অবশ্য ৫ তলা পর্যন্ত খাটে। সারা জীবন বিভিন্ন প্রয়োজনে লাইনে দাঁড়াতে হয়। লিফ্টে উঠার জন্য লাইনে দাঁড়ানোর মানে হয় না। একটা মজার কথা হলো এদেশে জিমে আর্টিফিশিয়াল সিঁড়ি আছে। ট্রেডমিলে যেমন দৌড়াবেন কিন্তু এক জায়গায় থাকবেন এখানেও তেমনি সিঁড়ি বেয়ে উঠবেন কিন্তু এক উচ্চতায় থেকে যাবেন। শেষে একটা কথা বলে দম(ভাব) নিবো... আরে ভাবী, জানেন না আমি তো আপনার ভাই কে সারাক্ষণ দৌড়ের উপর রাখি। তাই নাকি ভাবী !!! কেমন করে (চোখ বড় বড় করে তাকাবে)। কিছু না ভাবী.... ও ম্যারাথন এ অংশ নেয় এমনি ই দৌড়ের উপর থাকে। আমার কোন ক্রেডিট নাই।

Comments

Popular posts from this blog

Angelina Jolie Announces Candidacy for President of the United States